দৈনিক শিক্ষাপ্রতিদিন,কামরুজ্জামান সুইট
ঝালকাঠির নলছিটিতে রাতের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে দুই পরিবারের ৬ জন বরিশাল শেবাচিমে চিকিৎসাধীন আছেন। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ কামদেবপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়ীর প্রবাশী দুই পরিবারের সাথে এ ঘটনা ঘটে। পরে প্রতিবেশীদের সহায়তায় তাদের তাৎক্ষণিকভাবে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সুজন হাওলাদার(২৫) নামের একজনের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) আব্দুস ছালাম।
জানা গেছে, দক্ষিণ কামদেবপুরের হাওলাদার বাড়ির দুই পরিবারের সদস্যরা রাতে ভাত খাওয়ার পর একে একে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধারণা করা হচ্ছে, খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক কিছু মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
অচেতন হয়ে পড়া ব্যক্তিরা হলেন—পিয়ারা বেগম (৬০), তার পুত্র সুজন হাওলাদার (২৫), সুজনের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার (২০), কুয়েত প্রবাসী মামুন হাওলাদারের স্ত্রী জান্নাতি বেগম (২২), একই বাড়ির অন্য পরিবারের ফুলসন বেগম (৭০) এবং তার সৌদি প্রবাসী ছেলে মো. রাসেল এর পুত্রবধূ ফাতেমা বেগম (২৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী শর্মী আক্তার জানান, পাশের ঘরে চাচি (ফুলসন বেগম) অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি সুজনকে ডাকতে যান। গিয়ে দেখেন, সুজন মাতালের মতো কথা বলছে। তার স্ত্রী সুমাইয়ার খোঁজ করলে সুজন তার স্ত্রী কে চিনতে পারছেন না। এরপর অন্য রুমে গিয়ে দেখেন , একে একে সবাই অচেতন হয়ে পড়ছেন। এ অবস্থায় শর্মী দ্রুত বাড়ির অন্যদের খবর দেন।
ঘটনার বিষয়ে পিয়ারা বেগমের বড় পুত্রবধূ লাইজু আকতার বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না। বাড়ির লোকজন আমাকে ফোন করে জানালে আমি দ্রুত ছুটে আসি। এসে দেখি, সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বাড়িতে কে বা কারা এসেছিল, সে বিষয়ে কিছুই জানতে পারিনি। তবে রান্নাঘরের সামনে হাউজ তৈরির কাজ করছিল রাজমিস্ত্রীরা। তারা সন্ধ্যার পর পর্যন্ত কাজ করেছে।
তিনি আরও বলেন,খাওয়ার পর হঠাৎ সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে সকালে রাতের ভাত কুকুরকে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবেশীরা দেখেন, সেটি খেয়ে কুকুরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সেখান থেকেই বুঝতে পারি, খাবারের সঙ্গে অতিমাত্রায় কেউ চেতনানাশক মিশিয়ে দিয়েছে। তবে এর উদ্দেশ্য শত্রুতা নাকি চুরি, তা বুঝতে পারছি না।
এলাকার বাসিন্দা লোকমান হাওলাদার (৬০) বলেন, আমরা এসে দেখি, সবাই অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সে খবর দিই। পুলিশ এসে খোঁজখবর নেয়। এরপর রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্স আসে এবং সবাইকে বরিশাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় পুরো গ্রামে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।